Logo
এভিয়েশন এয়ারপোর্টস উৎপাদনকারী পর্যটন হোটেলস প্রবাস লাইফ স্টাইল কর্পোরেট রেগুলেটরস মুখোমুখি আরও
Aviationexpress.news is Under Development
Final version is coming soon...

নিরাপত্তা- সিদ্ধান্ত গ্রহণে দীর্ঘসূত্রিতার শঙ্কা

পরিবর্তন হচ্ছে বেবিচক আইন : সব ক্ষমতা যাচ্ছে মন্ত্রণালয়ের হাতে

Shafiullah Sumon | Published: Tuesday, November 11, 2025
পরিবর্তন হচ্ছে বেবিচক আইন : সব ক্ষমতা যাচ্ছে মন্ত্রণালয়ের হাতে

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) আইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ‘বেসামরিক বিমান চলাচল (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫’ নামে খসড়া জনমত ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামতের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।

তবে বেবিচক বলছে, প্রস্তাবিত অধ্যাদেশের বেশ কিছু ধারা কার্যকর হলে বাংলাদেশের বিমান নিরাপত্তা, আন্তর্জাতিক মান রক্ষা এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে জটিলতা সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (আইকাও) কর্তৃক পরিচালিত নিরাপত্তা মূল্যায়নে বাংলাদেশ ঝুঁকিতে পড়বে। সম্প্রতি সংশোধনীর খসড়া নিয়ে মন্ত্রণালয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়েছে বেবিচক।


পর্যবেক্ষণে বেবিচক জানিয়েছে, ২০১৭ সালের বিদ্যমান আইনের ১৪ ধারায় বেবিচক চেয়ারম্যানকে বিমান নিরাপত্তা সংক্রান্ত নির্দেশ, আদেশ ও বিজ্ঞপ্তি জারি ও সংশোধনের ক্ষমতা দেওয়া আছে, যা আন্তর্জাতিক মান ও নিয়ম মেনে পরিচালিত হয়। এই ক্ষমতার ফলে আইকাও কর্তৃক পাঠানো প্রস্তাবের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় নিয়ম পরিবর্তন করা সম্ভব হয়। কিন্তু প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে রুলস অব বিজনেসের ১৪(ক) অনুচ্ছেদ অনুসরণের কথা বলা হয়েছে, যেখানে কোনো সময়সীমা নির্ধারিত নেই। এতে করে আইকাও কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংশোধন করা সম্ভব হবে না এবং বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মান রক্ষায় পিছিয়ে পড়তে পারে।


বেবিচক জানায়, আইকাও সাধারণত নতুন নিয়ম বা সংশোধনের প্রস্তাব পাঠানোর সময় একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়, যার মধ্যে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে মতামত দিতে হয়। নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হলে প্রস্তাব স্বয়ংক্রিয়ভাবে গৃহীত হিসেবে বিবেচিত হয়। এরপর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রস্তাব কার্যকর করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু নতুন অধ্যাদেশে প্রস্তাবিত বিধান অনুসারে অনুমোদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বিলম্ব হলে আইকাও নির্ধারিত সময়সীমা রক্ষা করা সম্ভব হবে না। বেবিচক বলেছে, এর ফলে আইকাও বাংলাদেশকে “গুরুতর নিরাপত্তা উদ্বেগের দেশ” হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে, যা দেশের বিমান খাতের জন্য বড় ধাক্কা হবে।


বেবিচক সুপারিশ করেছে, জনস্বার্থে বর্তমান বেসামরিক বিমান চলাচল আইন, ২০১৭ এর ১৪ ধারা অপরিবর্তিত রাখা প্রয়োজন। কারণ, বর্তমান ধারা অনুযায়ী চেয়ারম্যান দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম এবং এটি আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেবিচকের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে জানায়, প্রস্তাবিত সংশোধন কার্যকর হলে বেবিচকের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা সীমিত হয়ে যাবে। এতে বিমান নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধান তৈরিতে বিলম্ব এবং আইসিএওর নিরীক্ষায় দেশের কার্যকারিতা দুর্বল হবে। একই সঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন বাধ্যতামূলক হলে প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে।


নতুন অধ্যাদেশে ট্রাভেল এজেন্সি সম্পর্কিত প্রস্তাবিত ধারা নিয়েও আপত্তি রয়েছে। খসড়া পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ট্রাভেল এজেন্সি আইন, ২০১৩ অনুযায়ী বিষয়টি ইতোমধ্যে নিয়ন্ত্রিত। নতুন অধ্যাদেশে একই বিষয় অন্তর্ভুক্ত করলে আইনগত জটিলতা ও দ্বন্দ্ব তৈরি হবে। তাই ট্রাভেল এজেন্সি সংক্রান্ত বিধান বিদ্যমান আইনে বহাল রাখাই যৌক্তিক।

বেবিচক বলেছে, বর্তমানে প্রচলিত আইনেই বিমান চলাচল নিরাপত্তা, যাত্রীসেবা ও প্রযুক্তিগত নিয়মাবলি আন্তর্জাতিক মানে রক্ষা করা সম্ভব। সুতরাং, আদৌ নতুন অধ্যাদেশের প্রয়োজন আছে কিনা সে বিষয়ে একটি বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ জরুরি।

সবশেষে বেবিচক তাদের মন্তব্যে জানিয়েছে, ২০১৭ সালের বেসামরিক বিমান চলাচল আইন অপরিবর্তিত রেখে বর্তমান কাঠামো বজায় রাখা এবং চেয়ারম্যানের হাতে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা বহাল রাখাই দেশের বিমান নিরাপত্তা, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও প্রশাসনিক দক্ষতা রক্ষার জন্য সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ হবে।


এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ উইং কমান্ডার (অব.) এটিএম নজরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২০১৭ সালে গ্যাজেট প্রকাশ করে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল। এটি সংসদের মাধ্যমে পাস হয়েছে। তাহলে এটি কেন তড়িঘড়ি করে সংশোধনের প্রয়োজন হলো বুঝতে পারছি না। বেবিচক চেয়ারম্যানের ক্ষমতা কমে গেলে এটি আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশনের (আইকাও) নিয়মকানুনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয় কি না সেটি দেখতে হবে। বেবিচক আইকাও থেকে অডিটেড হবে কি না সেটিও দেখা প্রয়োজন। যেহেতু এটি সংসদ থেকে পাস হয়েছে, আমার মনে হয় এটি সংশোধনে তাড়াহুড়ো না করে অপেক্ষা করা উচিৎ।


বিদেশি বিমান তদারকির অনুপস্থিতি

নতুন অধ্যাদেশে বিদেশি বিমান সংস্থাগুলোর বাংলাদেশে কার্যক্রম কীভাবে তদারকি করা হবে, তা উল্লেখ করা হয়নি। বর্তমানে বিদেশি বিমান সংস্থাগুলো শতভাগ দেশীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানকে সাধারণ বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেয়। এর মাধ্যমে স্থানীয় জনবল কর্মসংস্থানের সুযোগ পায়, দক্ষতা বৃদ্ধি হয়, বৈদেশিক মুদ্রা সংরক্ষণ ও রাজস্ব আয় বাড়ে।

তবে নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী বিদেশি বিমান সংস্থাগুলো চাইলে নিজস্ব অফিস স্থাপন করতে পারবে অথবা একাধিক প্রতিষ্ঠানকে সাধারণ বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবে। এর ফলে, বিদেশি সংস্থাগুলোর কার্যক্রম তদারকির সুযোগ সীমিত হয়ে পড়বে এবং মনিটরিং দুর্বল হবে।  বিষয়টি স্পষ্ট না হলে ভবিষ্যতে নিয়ন্ত্রণ ও জবাবদিহিতে সমস্যা তৈরি হবে বলেও পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে বেবিচক।


Make Comment

Login to Comment
Leaving AviationExpress Your about to visit the following url Invalid URL

Loading...
Comments


Comment created.

Weather Outlook

Clear

Dhaka, Bangladesh

Wind: 6.8 kmph · Precip: 0 mm · Pressure: 1015 mb

20.8°C

Mon

21.6°C

Tue

21.6°C

Wed

21.6°C

Related News